স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের বেতন স্কেল নবম গ্রেডে উন্নীত, বিসিএস ট্রেনিং বিশ্ববিদ্যালয় চালুসহ ১৫ দফা প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ‘শিক্ষায় বরাদ্দ বৃদ্ধি ও কার্যকর সংস্কারের’ দাবিতে শিক্ষা সংলাপে এসব প্রস্তাব উঠে আসে।
শিক্ষা সংলাপের শুরুতেই জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। শিক্ষা সংলাপে ছাত্র ফেডারেশনের প্রস্তাব পাঠ করেন কেন্দ্রীয় সহসাধারণ সম্পাদক ফাতেমা রহমান।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, অভ্যুত্থানের পর সরকারের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব ছিল শিক্ষা খাতের সংস্কারে মনোযোগ দেওয়া। একটা গণতান্ত্রিক শিক্ষাব্যবস্থা দরকার, এ জন্য সংস্কার প্রয়োজন। সব শিশু যাতে ছাত্র হয়ে ওঠে, সে জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হলে বাজেট বরাদ্দ দরকার। ঠিক তেমনি সবাই মিলে গণতান্ত্রিক শিক্ষাব্যবস্থার আদল তৈরি করা দরকার। ক্ষমতার কুক্ষিগতকরণ রাজনৈতিক ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোও তার বাইরে নয়। অনতিবিলম্বে শিক্ষকদের জন্যে স্বতন্ত্র বেতন স্কেল গঠনের দাবি জানান তিনি।
সংলাপে লেখক ও শিক্ষক সফিক ইসলাম বলেন, ‘আমাদের শিক্ষা খাতে বাজেট বরাদ্দ বাড়ানো দরকার, কিন্তু তা কোন কোন খাতে খরচ হচ্ছে, তার দিকেও আমাদের নজর রাখা দরকার। ছাত্র ফেডারেশন স্বল্প মেয়াদে ৪ শতাংশ ও দীর্ঘ মেয়াদে ৬ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়ার আবেদন করেছে। কিন্তু এ বরাদ্দগুলো কোন খাতে খরচ হবে, তা নিয়েও আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা বলেন, ‘শিক্ষা একটা রাজনৈতিক প্রকল্প, তাই আমাদের শিক্ষানীতির পলিটিক্যাল এজেন্ডা নির্ধারণ করতে হবে। আমরা স্বাধীনতার ৫৪ বছরে একটা অভিন্ন শিক্ষানীতি প্রণয়ন করতে পারি নাই। শিক্ষাকে ব্যবসায় পরিণত করা হয়েছে। যার যেমন আয়-ব্যয়, সে সে রকম শিক্ষা পাচ্ছে। আমাদের এই পদ্ধতি বদলাতে হবে।’
সভাপতির বক্তব্যে ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মশিউর রহমান খান বলেন, ‘আমরা অবিলম্বে শিক্ষা খাতের প্রয়োজনীয় সংস্কারের জন্য কমিশন গঠনের দাবি জানাই।...আমরা আজ যে খসড়া প্রস্তাব হাজির করেছি, তার ওপর রাজনৈতিক দল, ছাত্রসংগঠন ও সমাজের বিভিন্ন অংশের মানুষের মতামত নিয়ে তা সম্পূর্ণ করে আমরা আগামী ২৭ মে শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি আকারে তা প্রদান করব।’
সংলাপ সঞ্চালনা করেন ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ। সংলাপে বক্তব্য দেন শিক্ষক ও লেখক সফিক ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো সামীও শীশ, আমাদের পাঠশালার প্রধান শিক্ষক তোফাজ্জল হোসেন, শিক্ষা সংস্কার আন্দোলনের সংগঠক হাসনাত কবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি আবু রায়হান খান।
শিক্ষা সংলাপে আরও উপস্থিত ছিলেন বহুমুখী শ্রমজীবী ও হকার সমিতির সভাপতি এবং গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূইয়া, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য দীপক কুমার রায়, নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি ফারহানা মানিক, ঢাবি শাখার আহ্বায়ক আরমানুল হক, ঢাকা মহানগর ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি আল-আমিন প্রমুখ।
0 Comments