তারেকের প্রতিশ্রুতি, ক্ষমতায় ফিরলে স্বৈরাচার-অপব্যবহার নয়
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বৃহস্পতিবার বলেছেন, তাদের দল ক্ষমতায় ফিরলে বাংলাদেশকে এমনভাবে গড়ে তোলা হবে যাতে কেউ, এমনকি প্রধানমন্ত্রীও ক্ষমতার অপব্যবহার করতে বা স্বৈরাচার হয়ে উঠতে না পারেন।
লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি এক সেমিনারে বক্তব্য রাখার সময় তিনি বলেন, তাদের দল দেশকে একটি গণতান্ত্রিক ও মানবিক রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করবে, জনগণের মৌলিক মানবাধিকার, বাক স্বাধীনতা এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করবে।
‘আমরা নিশ্চিত করতে চাই, এবং আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করব, যাতে ভবিষ্যতে বাংলাদেশে কেউ, এমনকি প্রধানমন্ত্রীও ক্ষমতার অপব্যবহার করে স্বৈরাচার হতে না পারেন,’ বলেন বিএনপি নেতা।
তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে সরকারের প্রতিটি স্তরে জবাবদিহিতা এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা হবে, নিশ্চিত করা হবে যাতে কেউ আইনের ঊর্ধ্বে না থাকে।
রাজনৈতিক মতাদর্শের পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও তারেক রহমান উল্লেখ করেন যে একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য দেশের গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে ইতিমধ্যেই ঐক্য স্থাপিত হয়েছে।
‘আমরা সবাই বাংলাদেশকে এমনভাবে পুনর্গঠনের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যাতে স্বৈরাচার বা ফ্যাসিস্টরা আর কখনও মাথা তুলতে না পারে,’ তিনি বলেন।
তারেক রহমান এমন একটি বাংলাদেশের বিএনপির স্বপ্নের কথাও ব্যক্ত করেন যেখানে কেউ কোনো নাগরিকের অধিকার এবং স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। ‘আমরা সবাই একটি নিরাপদ ও সুরক্ষিত বাংলাদেশ চাই যেখানে জনগণের আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত হয় এবং যেখানে একটি নির্বাচিত ও জবাবদিহিমূলক সরকার জনগণের মালিকানা এবং অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে।’
বিএনপি নেতা বলেন, জাতি তথাকথিত উন্নয়নের রাজনীতি প্রত্যক্ষ করেছে, যা মূলত দুর্নীতি, অপশাসন এবং অপরাধীকরণের ওপর ভিত্তি করে ছিল।
‘বিপরীতে, বিএনপি যদি জনগণের ভোটের মাধ্যমে সরকার গঠন করে, তাহলে আপনারা আমাদের ৩১ দফা রূপরেখা দ্বারা পরিচালিত জনগণের ক্ষমতায়ন এবং অংশীদারিত্বের রাজনীতি প্রত্যক্ষ করবেন। আইনের শাসন, মানবাধিকার এবং বাক স্বাধীনতা আমাদের রাষ্ট্র পরিচালনার ভিত্তি হবে,’ তিনি আশ্বাস দেন।
বিএনপি রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য তার ৩১ দফা রূপরেখা নিয়ে একটি সেমিনারের আয়োজন করে। ঢাকায় অবস্থিত বিভিন্ন বিদেশি মিশনের কূটনীতিক, সুশীল সমাজের সদস্য এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন।
সেমিনারের বক্তব্য রাখেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে যুগপৎ আন্দোলনের সময় তার দল ৫০টিরও বেশি দলের সঙ্গে ৩১ দফা রাষ্ট্র সংস্কার প্রস্তাব প্রণয়ন করেছে।
তিনি উল্লেখ করেন যে, হাসিনার সরকারের পতনের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র সংস্কার তদারকির জন্য ইতিমধ্যেই বিভিন্ন কমিশন গঠন করেছে।
‘আমরা বিশ্বাস করি এই কমিশনগুলি থেকে যে সংস্কার প্রস্তাব উঠে আসবে তা ৩১ দফা রূপরেখার সঙ্গে নিবিড়ভাবে মিলে যাবে। তাই, আমরা ৩১ দফা কাঠামোটি আবারও জনগণের সামনে উপস্থাপন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি,’ বলেন বিএনপি নেতা।
১৩ জুলাই, ২০২৩ তারিখে, বিএনপি সংবিধান এবং রাষ্ট্র ব্যবস্থার সংস্কার এবং জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ৩১ দফা রূপরেখা প্রকাশ করে। এই প্রস্তাবটি আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে যুগপৎ আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী অন্যান্য দলের সঙ্গে পরামর্শক্রমে তৈরি করা হয়েছিল।
0 Comments